PhonePe: প্রতিদিন নতুন নতুন পথ খুঁজে প্রতারকরা সাইবার ক্রাইম করছে। সম্প্রতি প্রতারকরা ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা’ নামে তৈরি একটি ম্যালিসিয়াস অ্যাপের মাধ্যমে অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছে। এই অ্যাপটি ডাউনলোড করলেই প্রতারকদের কাছে ব্যবহারকারীর সমস্ত স্পর্শকাতর তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও প্রতারকরা এসএমএস ট্রাফিকও নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মাধ্যমেই প্রতারকরা Phonepe দিয়ে টাকা ট্রান্সফার করে নিচ্ছে।
শনিবার দিন তামিলনাড়ু পুলিশ অনলাইন জালিয়াতির এই নতুন পদ্ধতিটি প্রকাশ করে জানাচ্ছে, আর্থিক লেনদেনের জন্য শুধুমাত্র অফিসিয়াল অ্যাপ এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করা উচিত। তামিলনাড়ু পুলিশ ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা’ নামের এই ফেক অ্যাপটির কথা জানতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপ সহ অনেক চ্যানেলের মাধ্যমে এই অ্যাপটি সম্প্রচার করা হয়েছিল। অনুমোদিত অ্যাপ ভেবে যারা এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছিলেন তারাই এখান থেকে প্রতারণার স্বীকার হন।
সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ থেকে জানানো হয়েছে যে প্রতারকরা UPI (Unified Payments Interface) প্ল্যাটফর্মে ডিভাইসটি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বাধাপ্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে থাকে। অননুমোদিত লেনদেন এটি সম্ভব করে তোলে।
সম্প্রতি PhonePe-এর মাধ্যমে অননুমোদিত ব্যাঙ্ক লেনদেনের অনেক ঘটনাই প্রকাশ্যে এসেছে। তামিলনাড়ুতে এই মাসেই প্রায় ৭টি অভিযোগ ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালের মাধ্যমে দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, PhonePe-এর মাধ্যমে অপ্রত্যাশিত ভাবে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সব OBC সার্টিফিকেট কি বাতিল হয়ে গেলো? কি জানাল সুপ্রিম কোর্ট?
সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত ঘটনা ভারতে কমার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। মানুষের কষ্ট করে উপার্জন করা অর্থ প্রতারকরা প্রতারণা করে নিয়ে নিচ্ছে। এসএমএস বা ফোন কলের মাধ্যমে মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিমেষেই খালি হয়ে যাচ্ছে।
সরকার এই ধরনের প্রতারণা বন্ধ করার জন্য নানা রকমের পদক্ষেপও নিচ্ছে। TRAI (Telecom Regulatory Authority of India) জনগণকে সতর্ক করে একটি সতর্কতাও জারি করেছে। TRAI (Telecom Regulatory Authority of India) তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে এই নতুন স্ক্যাম সম্পর্কে জনগণকে জানিয়েছে।
TRAI (Telecom Regulatory Authority of India) জানিয়েছে, স্ক্যামাররা জনগণের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করছে। প্রতারকরা ব্যবহারকারীদের কল করে নিয়ম ভঙ্গ করার কথা জানিয়ে নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। তারপর ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করছে। TRAI (Telecom Regulatory Authority of India)-এর তরফ থেকে এই কলগুলি করা হচ্ছে না। এইরকম ফেক কল পেলেই জনগণকে সঞ্চার সাথী পোর্টালে অভিযোগ করার কথা বলা হচ্ছে।
সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত ঘটনা ভারতে দিন দিন বেড়েই চলেছে। NCRP (National Cyber Crime Reporting Portal) অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রায় ৭.৪ লক্ষ সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। প্রায় ১১,২৬৯ কোটি টাকা এই বছর জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারণা করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৬০ কোটি টাকা এই ভাবেই প্রতারণা করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের মতে, সাইবার জালিয়াতিতে আগামী বছর ভারতীয়দের ১.২ লক্ষ কোটি টাকা হারাতে হতে পারে। বেশিরভাগই চিন থেকে এই জালিয়াতি হয়ে থাকে।