Cyclone Dana Latest Update: ভারী বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে লণ্ডভণ্ড হবে বাংলা! আবহাওয়ার বিরাট আপডেট সামনে এলো

Cyclone Dana Latest Update: বাংলায় ফের ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা। সামনেই কালীপুজো। তবে এবার কি কালীপুজোর আগেই দুর্যোগ নেমে আসবে? সকলের মনেই এরূপ প্রশ্ন ইতিমধ্যেই জেগেছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর এবং ভারতীয় মৌসম ভবন এবার এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে মুখ খুলল। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বুধবার অর্থাৎ ২৩ অক্টোবর বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। এর প্রভাবে ওড়িশা উপকূলে ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু ওড়িশাতেই নয় বাংলাতেও ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কলকাতা সহ কিছু জেলাতে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কবে থেকে ঘূর্ণিঝড় বাংলায় দাপট শুরু করবে

দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দারা এই সপ্তাহের বুধবার বিকেল বেলা থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের আসল দাপট টের পাবেন। এখনও অবধি পাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পর সুখবর বার্ধক্য ভাতা নিয়ে! বিরাট সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার

রবিবার বিকেলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওড়িশার পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ (Cyclone Dana) আছড়ে পড়তে চলেছে। তবে প্রাথমিক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে যে ঘূর্ণিঝড়টি অত্যন্ত দুর্বল শ্রেণির হতে চলেছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকলেও প্রবল ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান

শনিবার দিন রাতেই ঘূর্ণাবর্ত থাইল্যান্ড উপসাগর থেকে আন্দামান সাগরে প্রবেশ করেছে। এই ঘূর্ণাবর্তটি ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে। এরপর এই ঘূর্ণাবর্তটি সোমবার দিন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। মঙ্গলবার দিন এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। এরপর সেটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। এরপর সেই নিম্নচাপটি বুধবার দিন মধ্যরাতে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

আরও পড়ুন: Vande Bharat Express: দীপাবলিতে বন্দে ভারত সবচেয়ে লম্বা এই রুটে দৌড়বে, জেনে নিন ভাড়া সহ বিস্তারিত

পূর্বাভাস অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে বুধবার দিন সকাল থেকেই দমকা হাওয়া দিতে শুরু করবে। এর সাথে বৃষ্টিও শুরু হতে পারে। ধীরে ধীরে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে আবহাওয়ার অবনতি ঘটবে। দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দারা বুধবার বিকেল থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের আসল দাপট টের পাবেন। এই ঘূর্ণিঝড়টি সম্ভবত বুধবার গভীর রাতে সুন্দরবন দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করবে।

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ৮০ থেকে ৮৫ কিমি হতে পারে। ঘন্টায় ১১০ কিমি পর্যন্ত দমকা হাওয়ার গতি হতে পারে। এখনও অবধি পাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে। তবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার উন্নতি হতে পারে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পর এবার এই প্রকল্প নিয়ে দারুণ খবর! সরকারের সিদ্ধান্তে জনমানসে খুশির হাওয়া

বিশেষ বুলেটিন

রবিবার ভারতীয় মৌসম ভবন একটি বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করে জানিয়েছে যে, বঙ্গোপসাগরের উপর থাকা ঘূর্ণাবর্তটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপ অঞ্চলে পরিণত হতে পারে। এই নিম্নচাপ অঞ্চলটি সাগরের উপর দিয়েই উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম দিকে এগোতে পারে। ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল বেলা সেই নিম্নচাপ অঞ্চলটি শক্তি বৃদ্ধি করে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর পরের দিন অর্থাৎ ২৩ অক্টোবর বুধবার সেই নিম্নচাপটি বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এটির নাম হবে ‘ডানা’ (Cyclone Dana)।

মৎস্যজীবীদের সতর্কীকরণ

ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কায় মৎস্যজীবীদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়ে আলিপুর আবহাওয়া দফতর মৎস্যজীবীদের সতর্ক করেছে। সমস্ত মৎস্যজীবীদের ২১ অক্টোবর, সোমবারের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: NMMSS Scholarship 2024: ১২ হাজার টাকার স্কলারশিপ পড়ুয়াদের জন্য কেন্দ্রের! ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আবেদন করতে হবে

কোন কোন জেলায় কেমন বৃষ্টিপাত হতে পারে?

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, আগামী মঙ্গলবার দিন পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার দিন সাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। সেই কারণে বুধবার দিন দক্ষিণের সমস্ত জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই চারটি জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার দিন ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে পৌঁছতে পারে। এর ফলে সেই দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই কারণে এই অঞ্চলগুলিতে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: DIC Recruitment 2024: লিগ্যাল অফিসার পদে নিয়োগ করবে DIC, কারা কী ভাবে আবেদন করবেন?

এছাড়াও হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই জেলাগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি ঠিকই কিন্তু বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় আগামী শুক্রবার এবং শনিবার ঝড়-বৃষ্টি হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং মালদহতেও বৃষ্টির জন্য হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও ২৪ অক্টোবর উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে। কলকাতাতে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী ২৪ অক্টোবর এবং ২৫ অক্টোবর অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Comment